Wellcome to National Portal
Main Comtent Skiped

Title
Potato blight or disease and its remedy
Details

আলুর লেইট ব্লাইট বা মড়ক রোগ ও তার প্রতিকার

           আলুর লেইট ব্লাইট বা মড়ক রোগ বিশ্বজুড়ে অন্যতম একটি ক্ষতিকারক রোগ। এ রোগের আক্রমনে আলুর ফলন গড়ে শতকরা ৩০ ভাগ কমে যায়। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী মাসে অর্থাৎ মধ্য কার্তিক থেকে মধ্য ফাল্গুন মাসে তাপমাত্রা রাতে ১০ থেকে ১৬ ডিগ্রি এবং দিনে ১৬ থেকে ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় আর্দ্রতা শতকরা ৯০ ভাগের বেশী হলে  এ রোগ বিস্তার লাভ করে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলে এ রোগ ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে মহামারি আকার ধারণ করে। বাতাস, বৃষ্টিপাত ও সেচের পানির সাহায্যে এ রোগের জীবাণু আক্রান্ত গাছ থেকে সুস্থ গাছে দ্রুত বিস্তার লাভ করে।

মড়ক রোগের লক্ষণঃ

  • রোগের আক্রমণে প্রথমে গাছের গোড়ার দিকে পাতায় ছোপ ছোপ ভেজা হালকা সবুজ গোলাকার বা বিভিন্ন আকারের দাগ দেখা যায়, যা দ্রুত কালো রং ধারণ করে এবং পাতা পঁচে যায়।
  • সকালে মাঠে গেলে আক্রান্ত পাতার নীচে সাদা পাউডারের মত জীবাণু দেখা যায়।
  • ঠান্ডা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় আক্রান্ত গাছ দ্রুত পঁচে যায়। এ অবস্থায় ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যেই ক্ষেতে সমস্ত গাছ মারা যেতে পারে।
  • এ রোগে আক্রান্ত আলুর গায়ে বাদামি থেকে কালচে দাগ পড়ে এবং খাবার অযোগ্য হয়ে যায়।

রোগ প্রতিরোধে করণীয়ঃ এ রোগ প্রতিরোধে আগাম আলুর চাষ অর্থাৎ ১৫ নভেম্বরের মধ্যে আলু রোপণ অথবা আগাম জাত চাষের মাধ্যমে এ রোগের মাত্র অনেকটা কমানো সম্ভব। রোগ সহনশীল জাত যেমন- বারি আলু-৪৬, বারি আলু-৫৩, বারি আলু-৭৭ এগুলি চাষ করা যেতে পারে। এ ছাড়া রোগ মুক্ত প্রত্যায়িত বীজ অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। নিম্ন তাপমাত্রায়, কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া ও বৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়ার সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধের জন্য ৭ থেকে ১০ দিন অন্তর অন্তর ম্যানকোজেব গ্রুপের অনুমোদিত ছত্রাকনাশক যেমন- ডায়থেন এম ৪৫ বা পেনকোজেব-৮০ ডব্লিউপি প্রতি লিটার পানিতে ২গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করে গাছ ভাল ভাবে ‍ভিজিয়ে দিতে হবে।

  1. রোগ দেখা দেয়ার পর আক্রান্ত জমিতে রোগ নিয়ন্ত্রন না হওয়া পর্যন্ত সেচ প্রদান বন্ধ রাখতে হবে। নিজের বা পাশ্ববর্তী ক্ষেতে রোগ দেখা মাত্রই ৭ দিন অন্তর যে কোন একটি গ্রুপের অনুমোদিত ছত্রাকনাশক পর্যায়ক্রমিকভাবে নিম্ন বর্ণিত হারে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করে গাছ ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। যেমন-
  • এক্রোবেট এম জেড (ম্যানকোজেব ৬০%+ ডায়মেথোমর্ফ৯%)-২ গ্রাম অথবা
  • সিকিউর ৬০০ ডব্লিউ জি(ম্যানকোজেব ৫০%+ ফেনামিডন১০%)-২ গ্রাম অথবা
  • মিলোডিডুও ৬৬.৮  ডব্লিউ পি (প্রোপিনেব ৭০%+ ইপ্রোভেলিকার্ব)-২ গ্রাম অথবা
  • জ্যামপ্রো ডিএম (এমটোকট্রাডিন ৩০%+ ডায়মেথোমর্ফ ২২.৫%)- মিঃলিঃ অথবা
  • কার্জেট এম ৮ (ম্যানকোজেব ৬৪%+ সাইমোক্সালিন ৮%)-২ গ্রাম অথবা
  • ফুলিমেইন ৬০ ডব্লিউ পি (ফ্লুমর্ফ ১০%+ (ম্যানকোজেব ৫০%)-২ গ্রাম
  1. যদি কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া দীর্ঘসময় বিরাজ করে ও রোগের মাত্রা ব্যাপক হয় সে ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ছত্রাকনাশকের যে কোন একটি মিশ্রণ পর্যায়ক্রমিকভাবে নিম্নবর্ণিত হারে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ দিন অন্তর স্প্রে করে গাছ ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে।

*এক্রোবেট এম জেড ৪ গ্রাম +সিকিউর ৬০০ডব্লিউ জি ১গ্রাম অথবা

*এক্রোবেট এম জেড ৪ গ্রাম+মিলোডিডুও ৬৬.৮  ডব্লিউ পি ১গ্রাম অথবা

* ফুলিমেইন ৬০ ডব্লিউ পি ৪ গ্রাম+অটোস্টিন ৫০ ডব্লিউডিজি( কার্বেন্ডাজিম ৫০%) ১ গ্রাম অথবা

* মিলোডিডুও ৬৬.৮  ডব্লিউ পি ৪ গ্রাম+সিকিউর ৬০০ডব্লিউ জি ১গ্রাম

রোগের প্রার্দূভাব বেশী হলে ৩ থেকে ৪ দিন অন্তর ছত্রাকনাশকের মিশ্রণ স্প্রে করতে হবে। ছত্রাকনাশক পাতার উপরে ও নীচে ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।

সতর্কতাঃ গাছ ভেজা অবস্থায় জমিতে ছত্রাকনাশক স্প্রে না করাই ভাল। আর যদি স্প্রে করতেই হয় তাহলে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে সাবানের গুড়া মিশিয়ে নিতে হবে। ছত্রাকনাশক স্প্রে করার সময় হাত মোজা, সানগ্লাস, মাস্ক ও  এপ্রোন ব্যবহার করতে হবে। সবসময় বাতাসের অনুকূলে স্প্রে করতে হবে।

 

প্রচারেঃ কৃষি তথ্য সার্ভিস, আঞ্চলিক কার্যালয়, কুমিল্লা ।

 
Attachments
Publish Date
07/01/2019
Archieve Date
30/06/2020